রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

সর্বশক্তিমান আলো (দ্বিতীয় পর্ব)


নূরে মুহাম্মাদ (দ:) এর নূরকে, নূরে আল্লাহতে অর্থাৎ “ফানাহ ফিল্লাহতে” অর্থাৎ আল্লাহ নামের সর্বশক্তিমান মহা আলোতে লীন হয়ে যাওয়া, নূরে মুহাম্মাদ (দ:) এর নূর এবং নূরে আল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ নামের মহা আলো, এক অন্যতে মিশে একাকার অবস্থায়, অবস্থান করছেন। যাঁরা আল্লাহর আদেশ পালনের মাধ্যমে, আল্লাহর নৈকট্য লাভে কৃতকার্যতা লাভ করেন। তাঁরাই নূরে আল্লাহ এবং নূরে মুহাম্মাদ (দ:) কে প্রত্যক্ষ করেন। নূর দ্বয় এক অন্যে মিশে একাকার হলেও, আপনাপন গুণে গুণান্বিতাবস্থায় অবস্থান করছেন। কিন্তু মিশে একাকার হলেও নূরে মুহাম্মাদ (দ:)  নূরে আল্লাহ হয়ে যায়নি। নূরে আল্লাহও নূরে মুহাম্মাদ (দ:) হয়নি। যেমন, একটি গ্লাসের মধ্যে আধা গ্লাস পানি এবং আধা গ্লাস দুধ মিশে একাকার হয়ে যায়। কিন্তু তাতে পানি এবং দুধ আপনাপন গুণে অবস্থান করছে। কিন্তু দুধ এবং পানি মিশে একাকার হলেও দুধ পানি নয়, পানি দুধ নয়। আল্লাহর প্রিয় বান্দাগণের মধ্যে যাঁদের আধ্যাত্মিক অর্থাৎ আভ্যন্তরীণ, ওয়েব সাইড, ফেইসবুক, খুলতে পারেন, তাঁদের ,পক্ষে আল্লাহ, রাসূল এবং মৃত ব্যক্তিদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব।

মহা স্রষ্টা আল্লাহর সৃষ্টি মুহাম্মাদি নূর থেকে মুহাম্মাদি নূরাত্মাকে আকার দিয়ে মর্তে প্রেরণ করেছেন। আমরা সাধারণ মানবগণ যে পদার্থের তৈরি, তিনি কিন্তু অর্থাৎ মুহাম্মাদ (দ:) এর পদার্থ এক নয়। কারণ তাঁর মধ্যে এবং আমাদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। যদিও তিনি বলেছেন আমি তোমাদের মতো, কিন্তু তোমরা নয়। কারণ আমার মধ্যে রয়েছে ওয়েব সাইড ফেইসবুক এর মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সংযোগ যন্ত্র স্থাপিত রয়েছে যা তোমাদের মধ্যে নেই। প্রতিয়মান হচ্ছে নবী (দ:) আকারে আমাদের মতো হলেও উনার রক্ত মাংশ অনেক উচ্চমানের অর্থাৎ আমাদের রক্ত মাংশ থেকে দূরগন্ধ বের হয়। নবী (দ:) এর শরীর মোবারক থেকে যে গন্ধ বের হতো তা ছিলো সুগন্ধ শরীর থেকে যে পানি জাতীয় ঘাম বের হতো তা ছিলো মেশ্ক্ আম্ববের মতো সুগন্ধ, নবী (দ:) এর মূ-মোবারকের লালা মিষ্টি ছিলো বলে নবী সাথীগণ অর্থাৎ ছাহাবায়ে কিরামগণ খেয়ে ফেলতেন।শরীর মোবারক থেকে বহিস্কৃত পানি অর্থাৎ পোছিনা নিয়ে ছাহাবায়ে কিরামগণ সুগন্ধ আতরের মতো আপন শরীরে মেখে নিতেন। নবী (দ:) এর সাথে সাধারণ মানবগণের তুলনা হতে পারে না। তিনি হলেন অতি মহামানব স্রষ্টার দোস্ত বা বন্ধু। তাঁকে সাধারণ মানব বলা যাবে না, মানবের মতো বলা যেতে পারে যেমন বলেছেন নবী (দ:) আমি তোমাদের উপমা স্বরূপ অর্থাৎ  তোমাদের মতো। নবী (দ:) কে স্বপ্নে বা তন্দ্রায় মানব আকারে দেখা যায়, অর্থাৎ তাঁর প্রতি যার ভালোবাসা যত গভীর হবে, মহান আল্লাহ তাঁকে মানব আকারে প্রদর্শন করাবেন, এবং তার মধ্যে আল্লাহর নূর সম্পর্কেও অনুভূতি সচেতনতা, জাগরন শক্তি জাগরিত হবে, এবং সদা আনন্দ-উৎফুল্ল, বুক ভরা উৎসাহ, বিরাজ করবে এবং আল্লাহর নাম নিয়ে নির্ভয়-নিবির্ভক চিত্তে চলবে। তার দ্বারা কখনও অবৈধ-অসত্য-কু-কর্ম সংঘটিত হবে না। নূর বা আলো সম্পর্কিত, আল্লাহ বলেছেন নবী (দ:) এর মাধ্যমে আল্লাহর বাণীটি, “আল্লাহু নূরুস্ সামা ওয়াতি ওয়াল আরদা” অর্থাৎ, আল্লাহর নূর কর্তৃক বা আলো দ্বারা নভোমন্ডল এবং মর্তমন্ডল সৃষ্টি। নভোমন্ডল এবং ভূমন্ডলের নূর জ্যোতি বা আলো আল্লাহ নয়। কারণ স্রষ্টা কর্তৃক সৃষ্টি হতে পারে না বা হয় না। আল্লাহর আর একটি বাণীতে, আল্লাহ বলেছেন নবী (দ:) এর মাধ্যমে “আল্লাহু খালাক্বাস সামা ওয়াতি ওয়াল আরদি” অর্থাৎ নভোমন্ডল এবং ভূমন্ডল আল্লাহর সৃষ্টি, সুতরাং প্রতিয়মান হচ্ছে যে, সৃষ্ট, সৃষ্টি করতে পারে না। যা পার্ েতা জীবনহীন অসচেতন বা অজাগরণ। তাই নভো এবং ভূ, বা মর্তের নূর আলো বা জ্যোতি সৃষ্টি করতে পারে না পারবে না। আল্লাহ নামের অন্তহীন নিরাকার সর্বশক্তিমান মহা নূরসমুদ্রে স্রষ্টার সকল সৃষ্টি জগত ডুবন্ত বা নিমজ্জিত। প্রতিয়মান হচ্ছে, নূরে ডুবন্ত প্রত্যেক অণু, পরমাণুতে নূরে আল্লাহ অবস্থান করছেন। যেমন একটি মাটির ঢিলকে , পানির পুকুরে বা কুপে নিক্ষেপ করলে ঢিলটির একটি অণূ-পরমাণূও পানি শূন্য থাকবে না। সুতরাং পরিলক্ষিত হচ্ছে যে, নূরে আল্লাহ সর্বত্র বিদ্যমান। আল্লাহর নামের সাথে মুহাম্মাদ নাম, আদম (আ:) দর্শন করেছেন বলে প্রকাশ। যদি তা হয় মুহাম্মাদ (দ:) নূরে আল্লাহর সাথে সর্ব সৃষ্টির পূর্বেও ছিলেন। প্রতিয়মান হচ্ছে যে, নূরে দোস্ত বা বন্ধু আল্লাহর সাথে নূরে হাবীবুল্লাহ, মুহাম্মাদ (দ:) থাকারই কথা। অথবা আল্লাহ যখনই চাহেন সাথে রাখতেই পারেন। যদি নূরে আল্লাহর সাথে নূরে মুহাম্মাদ না থাকেন, নবী (দ:) প্রদত্ত আমাদের প্রধান মুক্তি বাণীতে অর্থাৎ কালেমা তাইয়্যেবাতে মুহাম্মাদ নাম থাকবে কেন? সম্মানিত ওলাময়ে কিরামগণ ভালো জানবেন ।
বিঃদ্রঃ নূরে মুহাম্মাদ (দ:) কে মানুষের মতো করে, মানব জগতে পাঠিয়েছিলেন মানবের মতো করে। তাই নূরে আল্লাহর হাবীব মুহাম্মাদ (দ:) বলেছিলেন। আমি তোমারদের মতো কিন্তু আমি তোমাদের থেকে পৃথক। স্রষ্টা হতে আমার মাধ্যমে যা সংঘটিত হয়, তা তোমাদের মাধ্যমে হয় না।

বিঃদ্রঃ কুরআন, শরীফের ১৬তম পারা অর্থাৎ “১৬তমাংশে” “সূরা আল কাহাফ” ১১০তম বাক্যাংশে আল্লাহর পক্ষ থেকে নবী (দ:) এর প্রতি বাণী (ক্বুল-ইন্নামা আনা- বাশারুম মিছলুকুম ইউহা ইলাইয়া)। তুমি আমার বান্দাদের বলে দাও, ক্বুল=বল! ইন্নামা= নিশ্চয়ই। আনা= আমি, বাশার= মানুষ, মিছলু=উপমা বা মতো, কুম=তোমরা বা তোমাদের। ইউহা= ওহী, বার্তা, ইলাইয়া= মাবূদ হতে। অর্থাৎ ক্বুল ইন্নামা আনা বাশারুম মিছলু কুম ইউহা ইলাইয়া, অর্থাৎ আমি তোমাদের মতো মানুষ কিন্তু তোমাদের থেকে পৃথক কিভাবে? আমার সাথে মহা স্রষ্টা আল্লাহর মধ্যে বার্তা আদান প্রদান করা হয়। তোমাদের মধ্যে বা তোমাদের সাথে তা হয় না। অর্থাৎ আকারে গঠনে তোমাদের মতো হলেও তোমরা যে পদার্থের আমি সে পদার্র্থের নয়, পদার্থে  এবং পদার্থের পার্থক্যতা আছে। কোন বৃক্ষের বা উদ্ভিদের প্রতি দৃষ্টি গেলে মনে হয়, যেন বৃক্ষটি বা উদ্ভিদগুলো, যেন অমুখ বৃক্ষ বা অমুখ উদ্ভিদের ন্যায়। কিন্তু সে বৃক্ষ বা উদ্ভিদ, আমার মনে হওয়া উদ্ধৃতোক্তি সাদৃশ্য হলেও বৃক্ষ বা উদ্ভিদগুলো সে বৃক্ষ বা উদ্ভিদ নয়। মুহাম্মাদ (দ:) ছিলেন অতি মহামানব এবং শেষ নবী।  এ অতি মহামানবটি যে গুণ বা যে শক্তি সম্পন্ন পদার্থের অধিকারী, আমি যদি সাধারণ মানুষ হয়ে, অসাধারণ গুণ সম্পন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী মনে করি, বিশেষ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ব্যক্তির সাথে তুলনা করি ঠিক হবে কী? বিশেষ অভিজ্ঞ মহলের সমীপে আমার প্রশ্নটি উপস্থাপিত হলো। বর্তমানে আমাদের নেই সমাজ, সভ্যতা, মানবতা, সত্যতা, মান্যতা, সততা, নেই স্লীলতা, মমতা, সহায়তা নেই সহযোগিতা, নেই ভদ্রতা, নেই বিচার ক্ষমতা, ধর্মে, সমাজে এবং দেশরক্ষায়, নেই ঐক্যতা, নেই সহনশীলতা, নেই সুশিক্ষার ব্যবস্থা সুকর্মের তৎপরতা। আজ, কথা, লেখার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন রূপে আক্রান্ত আমাদের এ সমাজ। সভ্যতার কোন ভালাই নেই। অসভ্যতায় পরিপূর্ণ সমাজ, শতকরা ২/১ জন সভ্য হলেও সমাজকে সভ্য সমাজ বলে আক্ষায়িত করা যায় না। শতরা ২/১ জনে ভোট দিলে মেম্বার প্রেসিডেন্ট হওয়া যায় না। অসভ্যতার বলয়ে প্রবেশ করেছে আজকের এ পৃথিবী। বিজ্ঞজনদের বিবেকে তা সাক্ষ দিচ্ছে। আজকের পৃথিবী কলঙ্কিতাবস্থায় ঘুর পাক খাচ্ছে। বলতে লেখতে বিবেক অন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আজকের মানব নর-নারী পশুর সাথে কুকুরের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন চলছে। সমকামিতা চালু করছে। অসভ্যতার গভীরে, গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে। বিবেক বিবেচনার চোখ অন্ধ হয়ে গেছে। তাই তারা বুঝতে পারছে না তারা কি করছে, কি অবস্থায় জীবন কাটাচ্ছে? বিবেকহীন, অশান্ত জীবনকে জীবন বলা যায় না, হতে পারে সাময়িক কোটিপতি, যদি মানবতা, সভ্যতা, শ্লীলতা, মান্যতা, দয়া, করুণার, চিহ্ন টকুন না থাকে কোনো মূল্য আছে কি? অবগতির জন্য “আব.এ. জমজম সম্পর্কিত” উম্মুল মূমীনীন “মা” হাজেরা (আ:) কে হযরত ইব্রাহীম (আ:) যখন “ছাফাহ্ এবং মারওয়াহ” নামক পাহাড় দ্বয়ের মধ্য ভাগে নির্বাসনে রেখে গেলে মুরু ভুমির মধ্যে প্রখর রোদ্র তাপে তাপিত প্রাণে পিপাসায় পিপষিত হয়ে, ছাফাহ্ এবং মারওয়াহ পাহাড় দ্বয়ের মধ্যে পানির সন্ধানে ধাবিত হতে লাগলেন তখন তাঁর নয়নের মণি, কলিজার টুকরো, আল্লাহর প্রেরিত নবী হযরত ইসমাইল (আ:) দুধের পিপাসায় পিপাষিতাবস্থায় উত্তপ্ত বালূর মুরুতে পিপাষিত। দুগ্ধ শিশু ইসমাইল (আ:) হাত,পা ঝাকরাতে-ঝাকরাতে ক্রন্দনরতাবস্থায় তাঁর পবিত্র পদদ্বয়ের আঘাতে পায়ের বালু সরে যাওয়াতে একটি আধারের সৃষ্টি হলো। উক্তাধারে পানির ঝর্ণা প্রবাহিত হতে লাগলে, উম্মুল মূমীনীন “মা” হাজেরা (আ:) প্রত্যক্ষ করলেন এবং আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে, আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলেন। প্রবাহমান পানিকে ধরে রাখার জন্য বালির দেয়াল বানিয়ে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলেন। ক্রমে ক্রমে গভীর থেকে গভীরতর কুপের সৃষ্টি এবং আল্লাহর ঘর অর্থাৎ “বায়তুল্লাহ্ শরীফ” কুপের পাশেই আবিষ্কার হলো। ইসলামী ইতিহাসে এর বৃত্তান্ত জানা যাবে “তাওয়ারীখে” পানি জমা হতে হতে কুপে পরিণত হয়েছে এর পানি মিষ্টি এবং রোগ প্রতিষেধক। তাই সমগ্র মুসলীম দুনাইয়া বোতল ভরে ছোট বড় ড্রামে নিত হয়। পানির কমতি নেই বর্তমানে যন্ত্রের মাধ্যমে উত্তলিত হয়। আল্লাহর কুদ্রাতে পানি এসে জমা হয়। “জম শব্দটি আরবী ভাষা জম অর্থ সংগ্রহ। পানি সংগ্রহ হয় বলে কুপটির নাম “আব.এ জমজম” আব শব্দ আরবী আব- অর্থ  পানি অর্থাৎ জমা পানি যেমন, ছিলো এখনও তেমনই রযেছে কম বা বেশী নয় একই অবস্থানে রয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন